মাদারিপুর শহরের প্রাণকেন্দ্র এই বৃহদায়তন গ্রন্থাগার গড়ে ওঠে ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দে এবং সেখান থেকে বাড়িতে বই নিয়ে পড়ার সুযোগ রয়েছে। এরই মধ্যে এই গ্রন্থাগারে সংগৃহীত হয়েছে প্রায় ১৫,০০০ বই। বছরে প্রায় ৫,০০০ পাঠক-পাঠিকা এই গ্রন্থাগারের গ্রন্থভান্ডার ও পাঠকক্ষ ব্যবহার করে উপকৃত হন।
পাঠকের জন্য সময়: বিকাল ৪.৩০ মিনিট থেকে রাত ৮ টা। সাপ্তাহিক ছুটি: শুক্রবার।
যোগাযোগের জন্য ফোন নম্বর: ০১৯৬০৬৪৩৩৬০
সদস্য হওয়ার নিয়মাবলি
এক: গ্রন্থাগারের সদস্যপদ লাভ
ক. এই গ্রন্থাগারের দুটো সুযোগ রয়েছে- এক: পাঠকক্ষে বসে পড়া, দুই: গ্রন্থাগারের সদস্য হয়ে বাড়িতে বই নেওয়া।
খ. যথাযথ আবেদনপত্র পূরণের মাধ্যমে সদস্য পদের জন্য দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবিসহ আবেদন করতে হবে। আবেদনপত্র গৃহীত হলে সদস্য হওয়া যাবে।
গ. কাউকে সদস্যপদ দেওয়া, না দেওয়া বা পরিস্থিতিগত কারণে কারো সদস্যপদ বাতিল করার পূর্ব ক্ষমতা গ্রন্থাগার কর্তৃপক্ষের থাকবে।
ঘ. সদস্যকার্ড সদস্যকে নিজের কাছে রাখতে হবে। ঐ কার্ডের সাহায্যেই তিনি লাইব্রেরির বই দেওয়া-নেওয়া করবেন। প্রয়োজন হলে সদস্য নিজে না এসে অন্য কারো মাধ্যমেও বই দেওয়া-নেওয়া করতে পারবেন। এক্ষেত্রে সদস্য যাকে পাঠাবেন তার হাতে তাঁর স্বাক্ষরিত অনুরোধপত্র পাঠাতে হবে। তবে বই-এর দায়িত্ব সদস্যকেই বহন করতে হবে।
দুই: সদস্য ফি, মাসিক চাঁদা
ক. এই গ্রন্থাগারের সদস্য হতে হলে নির্ধারিত সদস্য অন্তর্ভুক্তি ফি জমা দিতে হবে। অন্তর্ভুক্তি ফি জমা নেওয়ার সময় হিসাব বিভাগের প্রয়োজনে সদস্যের নমুনা স্বাক্ষর ও এক কপি সম্প্রতি তোলা পাসপোর্ট সাইজের ছবি প্রয়োজন হবে।
খ. অন্তর্ভুক্তি ফি এর পরিমাণ ১০০ টাকা (সাধারণ সদস্য), ৫,০০০ টাকা (আজীবন সদস্য)।
গ. সাধারণ সদস্যদের জন্য মাসিক গ্রন্থাগার চাঁদা ১০.০০ টাকা। ষান্মাষিক বা বার্ষিক ভিত্তিতে অগ্রিম চাঁদা দেওয়া বাঞ্ছনীয়। তবে একসঙ্গে ছমাস বা এক বছরের চাঁদা দিতে অসমর্থ হলে ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে চাঁদা দেওয়া যেতে পারে। আজীবন সদস্যবৃন্দের মাসিক চাঁদা প্রদান করতে হবে না।
ঘ. তিন মাসের চাঁদা বাকি পড়ার কারণে একসময় স্বাভাবিকভাবে সদস্যপদ বাতিল হয়ে যাবে। সদস্যপদ নবায়ন করতে হলে তাঁকে পুনরায় জরিমানা অর্থ প্রদান করতে হবে।
তিন: বই নেওয়া
ক. সংরক্ষিত, রেফারেন্স সিল অঙ্কিত এবং ইস্যুর জন্য নয় চিহ্নিত শেলফের বইগুলো গ্রন্থাগারিকের অনুমতিক্রমে শুধু গ্রন্থাগারের পাঠকক্ষে নেওয়া যাবে।
খ. একসঙ্গে সর্বাধিক একটি বই বাড়িতে নেওয়া যাবে (সাধারণ সদস্য)। তবে আজীবন সদস্য হলে সর্বাধিক দুটো বই বাড়িতে নেয়া যাবে।
গ. দুই মাসের বেশি চাঁদা বাকি পড়লে বই সরবরাহ বন্ধ রাখা হবে।
চার: বই ফেরত দেওয়া
ক. বই নেওয়ার দুসপ্তাহের মধ্যে অবশ্যই তা ফেরত দিতে হবে। বিশেষ কারণে তা সম্ভব না হলে অন্য কাউকে বইসহ পাঠিয়ে অথবা পত্রযোগে সদস্যের নাম ও কার্ড নম্বর উল্লেখ করে আবেদনের মাধ্যমে সময় আরো দুই সপ্তাহ পর্যন্ত বর্ধিত করা যেতে পারে।
খ. সদস্যের পক্ষ থেকে কোনো অনুরোধ না এলে তৃতীয় সপ্তাহ থেকে এবং অনুরোধ এলে পঞ্চম সপ্তাহ থেকে বই ফেরত না দেওয়ার জন্য জরিমানা শুরু হবে। প্রতি সপ্তাহের বিলম্বের জন্য জরিমানা হবে ৫.০০ টাকা করে। পরবর্তীতে বই নিতে হলে জরিমানার অর্থ পরিশোধ করে বই নেওয়া যাবে।
গ. বই হারিয়ে ফেললে বাজার থেকে নতুন বই সংগ্রহ করে দিতে হবে। অন্যথায় বইয়ের দামের দ্বিগুণ পরিশোধ করতে হবে।
পাঁচ: সদস্যপদ স্থগিত, বাতিল এবং নবায়ন সংক্রান্ত গ্রন্থাগার কর্তৃপক্ষের ক্ষমতা
ক. যেকোনো সদস্যের সদস্যপদ নবায়ন, স্থগিত বা বাতিল করার ক্ষমতা গ্রন্থাগার কর্তৃপক্ষের থাকবে।
খ. অসাবধানতাবশত কেউ কার্ড হারিয়ে ফেললে, তাঁকে ৫০.০০ টাকা নবায়ন ফি দিয়ে নতুন কার্ড করতে হবে। নতুন কার্ড করার সময় অন্তর্ভুক্তি ফি প্রদানের রশিদ অথবা সর্বশেষ যে মাসের চাঁদা পরিশোধ করা আছে তার রশিদ নিয়ে আসতে হবে। অন্যথায় গ্রন্থাগার কর্তৃপক্ষ রেজিস্টার দেখে সদস্যের চাঁদা ও নিরাপত্তা অর্থের পরিমাণ জেনে নতুন কার্ড সরবরাহ করবেন। এজন্যে ১৫ দিন পর্যন্ত সময় প্রয়োজন হবে।
গ. সাময়িক অসুবিধার কারণে আবেদনের প্রেক্ষিতে বই জমা দিয়ে সদস্যপদ স্থগিত রাখা যাবে। স্থগিতকালে কোনো মাসিক চাঁদা দিতে হবে না।
ঘ. সদস্যপদ স্থগিত না করে যদি কেউ বই লেনদের করা থেকে বিরত থাকেন এবং এ অবস্থায় যদি তাঁর কাছে গ্রন্থাগারের কোনো বই আটকে না থাকে তাহলে তাঁর আবেদনের প্রেক্ষিতে ঐ সময়কার চাঁদা গ্রহণ না করার ব্যাপারটি গ্রন্থাগার কর্তৃপক্ষ বিবেচনা করতে পারেন।
ছয়: অন্যান্য
ক. ঠিকানা পরিবর্তন করলে সদস্যকে অবশ্যই পরিবর্তিত ঠিকানা গ্রন্থাগার কর্তৃপক্ষকে জানাতে হবে।
খ. বইয়ের মধ্যে যে কোনো কিছু লেখা/দাগ দেওয়া, ইচ্ছাকৃতভাবে বইয়ের পৃষ্ঠা/মলাট ছেঁড়া সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ। কোন সদস্যের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে লাইব্রেরি কর্তৃপক্ষ উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে।
গ. সাপ্তাহিক ছুটি শুক্রবার ছাড়া গ্রন্থাগারের সময়সূচি প্রতিদিন কর্মদিবসে বিকাল ৪.৩০ মিনিট থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত। সরকারী ছুটির দিনগুলোতে গ্রন্থাগারের কার্যক্রম বন্ধ থাকে।